স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন...

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ৬৩১, আহত ১৯ হাজারের বেশি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে অন্তত ৬৩১ জন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ। আন্দোলন শুরুর পর গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত হতাহতের এই তথ্য সঙ্কলিত করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বা এমআইএস শাখা আন্দোলনে আহত ও নিহতদের এই তালিকা তৈরি করছে। সারাদেশের সরকারি–বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তথ্য নিয়ে করা এ তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে। প্রতিবেদন তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৪৫০ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে মৃত অবস্থায়। বাকি ১৮১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। খবর বিডিনিউজের।

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে জুলাইয়ের শুরুতে যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তা তীব্র আকার ধারণ করে ১৫ জুলাইয়ের পর। ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে মারা যান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৫ জন নিহত হন। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সহিংসতা। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তীব্র ছাত্র–গণআন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।

এই আন্দোলনে হতাহতদের তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ অগাস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির এই কমিটির প্রধান। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা তালিকাটি তৈরি করে। কমিটি গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির গতকাল বলেন, আহতদের মধ্যে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তত তিন হাজার জন চিকিৎসা নিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতালে। এটি প্রাথমিক তালিকা, সংখ্যাটি নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে।

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনের সময় ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৪৭৭ জন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে একজন নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যেও ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, ১১ হাজার মানুষ। চট্টগ্রাম বিভাগে আহতের সংখ্যা দুই হাজার। আহত হয়ে যারা হাসপাতালে গেছেন, তাদের তিন হাজার ৪৮ জনের অবস্থা ছিল গুরুতর, তাদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। কমপক্ষে ৫৩৫ জন তাদের আঘাতের কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছেন।

আরও খবর